[১]
মধুরিমাঃআমায় তুমি নিয়ে চলো বানভাসি জলের মতো।
************************************************************
মধুরিমা,
বসন্ত তোমায় সাজিয়েছে নিজ হাতে।
তোমার সারা শরীরে,
গেঁথে রেখেছো তুমি, গানের অলংকার।
অস্থির অবগাহণে তুমি ছড়ালে,
ভোরের দীপ্তি নব রবি কিরণে।
প্রণাম তোমায়, হে ভালোবাসার দেবী।
তোমার ছায়ায় আমি খুঁজে পেয়েছি,
বেঁচে থাকার আসল মানে।
কঠিন সময় জয় করেছি যত, তোমারই অনুপ্রেরণায়।
তোমার তনু স্রোতস্বিনী সম,
বয়ে চলে আমার হৃদয় গভীরে।
তুমি আরো সিক্ত করো আমায়,
নিঃস্ব করো আমায়,হে ভালোবাসার দেবী।
তোমার শরীরের বর্ণ বাহারে, আমি হারাই বারবার।
আমায় তুমি নিয়ে চলো বানভাসি জলের মতো।
রচনা কালঃ১৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:১৯
[২]
মধুরিমা , তুমি কেমন আছো ?
****************************************************
নিদ্রালু চোখে হাজার স্বপ্ন ভিড় করে আজকাল ।
তোমার আমার স্বপ্ন ,জুটিবাধার স্বপ্ন , জুটি ভাঙার স্বপ্ন ........।
সেই সে প্রথম আবেগের বেলায় .।
আমি খাতার পৃষ্ঠা ভরে তোমার প্রেমময় মুখ এঁকেছি কত শত শত।
কারণে অকারণে..........।
তোমার সাথে আমার নাম লিখেছি অপূর্ব + মধুরিমা !
এঁকেছি কেটেছি এঁকেছি কেটেছি নিজের মনের মতো
আমি বোকার মত কৈশরে তোমার দেওয়া কষ্ট মেনে নিয়েছি।
কষ্টেরা অতীত!এখন তা দুঃখবিলাসে রূপ নিয়েছে।
তখন কত অস্থির ছিলাম ভাবতেই হাসি পায় ।
আমি তখন সারাটা দিন চেয়ে থাকতুম তোমার পথের পানে .......
যে পথ দিয়ে তুমি স্যারের কাছে পড়তে যেতে..বা খেলতে।
তোমার বাবা সে কি ভয়ঙ্কর রূপ ........?
আমার মনের একটা গোপন কুঠোরিতে তোমার দেওয়া পুরোনো উপহার গুলো এখনো আছে।
সেদিন গুলোতে কত স্বপ্ন ভালোবাসায় আকড়ে ছিলো এবং আছে।
তোমাতেই অভ্যস্ত ছিলাম পাগলের মতো!
খুব জানতে ইচ্ছা করে ,মধুরিমা তুমি কেমন আছো ?
আমি জানি তুমি দুর প্রবাসে একলা আছো।
আমি জেনেছি ।
স্বাচ্ছন্দ্যের লোভে গড়া সংসার তুমি ভেঙে ফেলেছো।
আমিও একলা আছি....।
ভেবো না তোমার বিরহে আমি সন্ন্যাস জীবনযাপন করেছি ।
আমিও ভালোবাসার স্বাদ গন্ধ সব নিয়েছি....।
তারপর সেই স্বপ্নও একদিন ফাটা বেলুনের মতো ভেঙে গেছে ।
তোমার আমার জীবনের , অতীতে আমার কষ্টে ভেজা মুখ !
তোমাতে অভ্যস্ততা........।
তোমার স্মৃতি পরিনত হয়েছে আজ আমার দীর্ঘশ্বাসে.....
তোমার পছন্দের আলো ঝলমল সুখের খোঁজে হারিয়ে যাওয়া।
সেই মুখের নষ্ট মায়া! সম্পূর্ণ একটা মানুষকে নষ্ট করে .......।
আমার বুকের মধ্যে সুতীব্র ক্ষত হয়ে রয়ে গেলে ।
আর আমি তোমার বিরহে এখনো একলা একা স্মৃতি গুলো রোমন্থন করি।
অন্য রকম সুখ পাওয়ার আশায় .........
মধুরিমা ,তুমি কেমন আছো ?
রচনাকালঃ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:৩১
***********************************************************
[৩]
এই আমি ও মধুরিমা
************************************
মধ্যরাতের ছায়ামানব এই আমি ।
একাকী অলস সময়গুলো কাটে না আর এখন কিছুতেই।
বিরক্তিকর প্রহরগুলো যাতনা বাড়ায় কেবল ই....।
ভাবি বসে আমার নিঃসঙ্গ অধ্যায় নিয়ে।
আকাশ তোমার কাছে একটা প্রশ্ন ছিলো....... ,
তুমি তো সাক্ষী ছিলে,
ইচ্ছেঘুড়ি চেপে এলোমেলো দুরে কোথাও যেতে.......
চেয়েছিলাম তো এই আমি ও মধুরিমা।
কালো-কালো পাখিগুলি বাকা ঝাঁক বেধে উড়ে চলে যেথায় ।
তোমার বুকের কাছাকাছি।
তোমার স্নেহের ছায়ায় ....।
দেখতাম বসে বসে প্রায় আমরা।
আকাশ তোমার বুকটা কতই না নীল,
অজানা রঙের পাখীগুলো ক্রমশ আরো ছোট হতে হতে বিন্দু হয়ে যায়,
যেন তোমার বুকে কালো কালো তিলক হয়ে ফুটে আছে।
অথবা নক্ষত্রেভরা রাতে নিস্তব্ধ চরাচরে....,
দুরে বনমাথায় ঝিকিমিকি জোনাকির আলোয়।
যেমনি করে আমরা মিশে যেতে চাইতাম ........
আমাকে তুমি আবার অনুপ্রেরণা দাও ।
নিঃসঙ্গতা দুর করে আবার তোমার শুক্লাতিথির পূর্ণিমার চাঁদের-
আলোয় পথ দেখাও.......।
যাতে আমি আবার পৌছে যেতে পারি তোমার বুকে।
শুধু আমি নই সাথে মধুরিমা আসবে হয়তো ....
দেখা হবে তোমার বুকের মধ্যিখানে যেখানটায় আকাশ অনেকটা নীল ।
দিনগুলি হবে হাজার রঙে রাঙানো অবাস্তব স্বপ্নীল।
রাতগুলো হবে বর্ণাঢ্য ,নক্ষত্রের আলোয় উজ্জ্বালিত ।
আমি ফিরতে চাই.....।
আমি আর মধুরিমা দুজনে একসাথে ই ফিরতে চাই .........
রচনাকালঃ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৪
*************************************
[৪]
মধুরিমাঃ তোমাকেই খুঁজছি
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৪৫
মধুরিমা,
নীল আকাশে মাঝে আমি তোমায় খুঁজি ,
খোলা দিগন্তের শেষে আমি চোখ মেলি......
যে পথে তুমি চলে গেছো একদিন
বিষন্ন মন নিয়ে আমার ই ভুলে !!
একই পৃথিবী একই আকাশ
খোলা প্রান্তর পথ নদী ঘাট
তবু তোমার কাছে পৌঁছাবার কোন উপায় জানা নাই ।
ঠিকানা না রেখে এক বুক হতাশায়
শুধু দীর্ঘশ্বাস হয়ে কোথায় হারিয়ে গেলে......প্রিয়তমা।
অবনত অপরাধবোধের দীর্ঘশ্বাস সর্বত্র
চকিতে হাঁটাপথে তোমাকেই খুঁজে ফেরা ,
এখনো এলে না এলে না ....
তবে কি আর কখনো দেখা হবে না?
************************************************
[৫]
মধুরিমা ও আমিঃ যখন বসন্ত ছিলো
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৫৩
কতবার বলেছি !!
তোমার জলরঙের শাড়ি পরা দেখলে আমার রাগ হয়।
দেখো তো!
সবাই কিভাবে হ্যাংলার মতো ড্যাবডেবিয়ে দেখছে!
চোখগুলো এমনভাবে নাচাচ্ছে !
অদ্ভুত!!
কোনকালে আর কোন মেয়েকে দেখেনি মনে হয় !!
এমনভাব করছে,
পারলে তো দেখি এখনই ছুটে আসে।
অসভ্য একেকটা।
মনে হচ্ছে গিয়ে একেকটাকে থাপ্পড় মেরে দেই।
মধুরিমা হাতটা ছাড়ো তো........
********************************************************
[৬]
মধুরিমাঃ তার তথাকথিত প্রেমিক ও আমি
২৮ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:১৪
নিত্যদিনের মতো আজো মধুরিমা এসে দাড়ালো,
ঝুল বারান্দায়।
চুল শুকানোর বাহানায় হয়তো।
সদ্য জলে ভেজা আদ্র্র মুখ,
অলৌকিক মোহময়ী চঞ্চলতা ছুঁয়ে,
তার রূপকে করেছে স্বর্গীয় আভাদীপ্ত।
কারো কারো রূপে তীব্র টগবগে প্রানবন্ত ভাব থাকে,
অহংকার থাকে
আবার
আদ্যাশক্তি ছুঁয়ে যায় অভিন্নতা।
ঠিক তেমনি বর্ণাঢ্য মধুরিমা!
আমি আড়ালে জানালার গ্রিল ঠোঁটে ধরে ,
চোখে দেখে নয়ন সার্থক করি।
এবং
তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো চেয়ে ই থাকি মানসী পানে।
মধুরিমার এসবে ভাবনা নেই যেন,
তার প্রেম পরিণয় সব বুঝি মনের গভীরে লুকানো।
সদা অবিনীত,গৌরবান্বিত ,অবিমিশ্র।
সে জানে শত শত অপ্রতিভ যুবক তাকে দেখে প্রতিনিয়ত,
যেমন এই দুপুরে ও তেমনি।
শীতে রোদ পোহানোর মত প্রেম পোহাচ্ছে তারা।
নিচের পৃথিবীকে সে বরাবরই অহংকারী চোখে চায়।
মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখে,
যুবকগুলোর দিকে হয়তো করুণা ছুঁড়ে দেয় দৃষ্টির চাহনি রেখে,
এবং তৎক্ষণাৎ আবার গ্রীবা উচু করে সে অহংকারী পাথরের মূর্তির মতো ভাবলেশহীন
আকাশের দিকে চেয়ে রয় ।
আর এদিকে পাণিপ্রার্থী যুবকেরা সিগারেটের বর্ণিল ধোয়ায় নিঃশ্বাস ছেড়ে,
নিকোটিন পুড়িয়ে,
সেই ধোয়া গোল গোল করে পাকিয়ে উড়িয়ে দেয় আকাশে,
চলে অবিরত আর অনবরত,
শুধু রাতের অপেক্ষায় প্রহর গোনে,
যখন সে স্বপ্নে ধরা দেবে অবলীলায়।
রূপকথার রাজকন্যা হয়ে!!
আর
আমি শুধু দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি ......।
************************************************
[৭]
মধুরিমাঃ ধরেই নিলাম, এ আমারই ব্যর্থতা
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৫৪
মধুরিমা,
তোমার খোলা আকাশে
আজকাল পারিজাত ফুলগুলো
বড্ড বেশি রঙীন দেখায়।
তোমার বাহান্ন তীর্থের শরীর
আমায় অনর্থক রাত জাগায়।
তোমার ওই নিটোল কোমর,
বাঁকা ঠোঁট,চঞ্চল পটলচেরা চোখ,
দীর্ঘ কেশ
একহারা গড়ন,চলার ভঙ্গি,
আমার হৃদয়ে কেবলি নিগম তুলে ধায়।
আচ্ছা তুমি এরকম পাকাল মাছের মতো
পিচ্ছিল কেন বলতে পারো?
তুমি কি জানো?
তোমার জন্য আমার এই পৃথিবীতে আসা।
তোমার জন্য আমার সমস্ত কবিতার পঙক্তিগুলো এলোমেলো এবং প্রথাবিমুখ ।
তোমার জন্য আমার স্বপ্নদিনের অশ্রুত হাততালি দেয়,
তোমার জন্য আমার যত নিকোটিন পোড়ানো।
জানিনা , জানো কিনা ?
একবার হলেও আহ্লাদি করে বলতে তো পারো !
হোক মিথ্যে করে!
বলতে তো পারো!
ছাড়ো তো এসব ভাবনা চিন্তা আর
বিড়ি সিগারেট , আমার হাতটা ধরো।
জানি তুমি উত্তর দেবে না ,
বলবেনা কোন কথা।
হয়তো নৈবেদ্য সমূহ সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি
তোমার মন মন্দিরে।
হয়তো ফুটিয়ে তুলতে পারিনি আমি আমার
মনের ব্যক্তিগত বার্তা সকল,
তোমার মনের মতো করে সাবলীল হরফে ।
ঠিক আছে ধরেই নিলাম, এ আমারই ব্যর্থতা
******************************************************
[৮]
মধুরিমাঃ এলে তুমি অবেলায়
১১ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৮:১২
অন্ধকারে হঠাৎ করে
চমকে উঠলাম
অকস্মাৎ!
একি তুমি!
চিলেকোঠার ঘরে নিকোটিনের গন্ধে
তখন সেই রকম অবস্থা।
কিছুটা চেনা গন্ধে সন্দেহ ভরা চোখ
খুঁজতে থাকে চেনা কিছু ।
এশার আযান চলছে কাছের মসজিদে তখন।
অন্ধকার, তবু বিড়ির আগুনের আবছা আলোয়,
তোমার অঙ্গভঙ্গির সঞ্চালনে , ভঙ্গিতে
স্থির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলো মস্তিষ্ক।
তুমি!
এযে তুমি!
এতো চির নবীন কমলিনী মধুরিমা।
হঠাৎ উদাস হলো মনটা,
বুকের মধ্যে গরম হাওয়া ঘুরে গেল একরাশ।
কেঁপে উঠলো দেহ,তনু, মন।
হিম বয়ে গেল শিরঃদাড়া বেয়ে!
তারপর নিমেষেই তীব্র ক্রোধে জ্বলে উঠলো অন্তকরণ!
সেই সময় কে যেন নিষ্প্রভ কণ্ঠে বলে উঠলো ,তুমি মনে হয়?
বিড়িটা এখন কি খুব বেশি টানো?
শরীরে প্রভাব পড়বে যে!
আমার বুকে এখন ও চির বিরাজমান অতল ক্রুশবিদ্ধ কষ্ট।
মধুরিমা ,শুধু তোমার কারণ।
তুমি ছিলে আমার শিয়াল কাঁটার বনে
মধুচক্রস্থিত স্ত্র্রীমক্ষিকা একসময়।
আমি বুকের থেকে ঘামের মতো মুছে ফেলেছি তোমার নাম বর্তমানে!
কি যে হলো হঠাৎ,
আমি রুক্ষ কর্কশ স্বরে চেঁচিয়ে বললাম,
তুমি ফিরে যাও মধুরিমা।
আমি এখন আর তোমার নই।
তুমিও এখন আর আমার নও।
তোমার আমরা পথ এখন দুটি দিকে।
তুমি এখানে কি চাও?
আমি পরস্ত্রীর সাথে কথা বলিনা।
তোমার চোখে কি জল এলো?
হয়তোবা।
অনেক সময় ব্যাথার কাঁটা ফুটিয়ে দিতে হয়,
ব্যাথার স্থানে।
যন্ত্রণা সারাবার জন্য।
তুমি ফিরে গেলে।
ক্লান্ত দেহ ভঙ্গিমায়।
আমার বুকটা আবারো কেঁপে উঠলো অপরিজ্ঞাত মর্মযন্ত্রণায়।
বুক চিনচিন সাথে মনস্তাপ ,পীড়ন।
এতো ক্লেশ অতর্কিতে কোথা হতে এলো কে জানে!
অভিসন্তাপ তো দুর হলো না যে কিছুতেই!!
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
[৯]
মধুরিমাঃ ছেড়ে দাও নিষিদ্ধ যুবকের হাত
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:৫৪
মধুরিমা,
কেন ধরেছো হাত তুমি অচেনা যুবকের?
কেন এত ঢলাঢলি?
দেখছে সবই ওই দখিনা ধ্রুবতারা.নীল জোছনা,
স্বপ্ন ভাঙা চোখে।
কেন তুমি বুঝেও বুঝো না, কেন?
ফিরে এসো প্রিয়া,
এসে ধরো এই প্রেমিকের হাত।
ঠোঁটে রাখো ঠোঁট,
আলগোছে নিভিয়ে দাও বেহায়া যত আলো।
একান্ত আকর্ষণে।
চলে এসো মধুরিমা।
এই বসন্তে,প্রেমময় নীপবনে।
জেনে রেখো,
অনেক ব্যাথা বুকে সয়ে,হারায়নি ধৈর্য।
ফিরে এসো সুনামির ঢেউ হয়ে,
তৃষিত বুকের তপ্ত বালুচরে।
আছড়ে পড়ো উদ্দামতায়।
আমি সব চাপ সয়ে, সব ক্লেশ মেনে,
টেনে নেব তোমার নির্যাস।
এসো ধরো হাত,এসো নিবিড় সন্তোলনে।
আমি বলছি, তুমি ছাড়ো হাত ওই নিষিদ্ধ যুবকের।
ফিরে এসো প্রিয়তমা।
**************************************************************
[১০]
মধুরিমাঃ আজ তোমার বিসর্জনের দিন
২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৭:২২
মধুরিমা,
শুধু তোমায় দেখবো বলে,
মন খারাপ। তবু,
এক আকাশ ভালোবাসা নিয়ে,
এলাম ব্যলকনিতে।
আজ যে তোমার বিসর্জনের দিন!
আজ আমার স্বপ্ন ভাঙার দিন!
এতো সেজেছো,
তবু মনের কষ্ট লুকাতে পেরেছো কি প্রিয়তমা?
কপালে পরেছো টিপ,
চোখে কাজল, ঠোঁটে মেখেছো আগুন রাঙা রঙ।
পুরো মুখ তোমার আবির রং এ রাঙা,
এত সাজ এত অলংকার…..।
অপরূপা লাগছে তোমায় বিয়ের কণের সাজে,
তবু
এত যতনেও,
তোমার কষ্টের ছাপগুলো,
একটুও লুকাতে পারোনি প্রিয়তমা।
আমার চোখ তুমি ফাঁকি দেবে?
কিভাবে?
এতটাই সহজ!
তোমার বিষন্ন আকাশ দেখে,
আমার চোখে যেন এলো বরষা।
মনের অলিন্দ বেয়ে বয়ে গেল কষ্টের নীল স্রোত!
সানাইয়ের মৃদু সুর,ভীড়, কোলাহল।
অতিথি আপ্যায়ন,
কতো আড়াল কত আবডাল!
কিন্তু এতো আড়ালের পরেও মন আড়াল হবে কি করে?
প্রিয়তমা।
তোমার চোখ যে মনের আয়না।
আমি সেই আয়নাতে দেখি,
তোমার কষ্টের উপাখ্যান।
আর তীব্র দহনে কেঁপে উঠি বারেবার।
হঠাৎ চোখে বান এলে শেষ দেখা দেখবো কি করে?
কেন এতো জল আসে চোখে?
বলো না প্রিয়তমা?
মহা যন্ত্রণা হলো দেখছি।
এখন তো আমায় ভালোবেসে চোখ মুছিয়ে দেবার মতো,
কেউ রইলোনা আর।
তবু তুমি ভালো থেকো প্রিয়তমা।
ভালো থেকো মধুরিমা।
*****************************************************************
[১১]
মধুরিমাঃ কিছু সুখ স্মৃতি
১০ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:৫৫
শহুরে চাঁদের আলো অতটা কাব্যিক নয়।
যতটা কাব্যিক খোলা প্রান্তরের জোছনা।
কতদিন হয়ে গেলো,সনাতন জোছনা মাখা হয়নি।
তোমায় আমায় মিলে!
তাই নাগো প্রিয়তমা?
তোমার কি মনে পড়ে মধুরিমা?
তুমি আমি ঝিলের ধারে,
রাত গভীরে।
শূন্য শুনশান স্তব্দ চারপাশ।
নারকেল পাতার ফাঁকে পূর্ণ চাঁদ।
দম বন্ধকরা ভালো লাগা মুহুর্তে সে সময় যেন!
উদাসী কোন রাখাল রাত নিশিথে বাজায় বেদাগ সুর,
সেই মধুক্ষণে,
তুমি রেখেছো হাত আমার এই হাতে।
অপরিমিত ভরসায়।
রাত্রি জাগা স্খলিত নিদ্রা সঙ্গী সেই প্রহরে।
শুধু তুমি আমি ,পৃথিবীতে যেন একমাত্র মানব মানবী,
ঝিরিঝিরি দখিনা হাওয়ার আন্দোলনের মাঝে।
বাষ্পীভুত দুঃখবিলাসের মৃদু মন্দ করুণ সুর বাজছে
অমত্ত চরাচরে।
কথা চলে মুখে নয়,
হৃদয় থেকে হৃদয়ে অব্যক্ত ভাষার ইঙ্গিতে,
আর সুখের দোলায়,
আমরা চলেছি ভেসে অজানাতে।
শুধু ছায়াগুলো আছে সঙ্গী হয়ে পাশে পাশে।
*******************************************************************
[১২]
মধুরিমাঃ আইসোলেশনের দিনগুলোতে তোমায় মনে পড়ে
৩০ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৬:২০
জীবনের চলতি পথে,
অনেকগুলো কান্না একসাথে
জড়ো হয়ে বেদনা ও অভিমানের সৃষ্টি হলো।
তিমির রাত্রি ঘন ঘোর আঁধার,
শ্বাসরোধ হয়ে আসা সময়।
তবুও কি তুমি ফিরবে না মধুরিমা?
আসবেনা খোঁজ নিতে একবার,
দেখবে না চোখের দেখা?
মেয়েদের এতো বেশি নির্দয় হতে নেই প্রিয়তমা।
জানি পৃথিবী ভর্তি অক্সিজেন।
শুধু আমার জন্য বিধাতার বরাদ্দকৃত
অক্সিজেনটুকু ফুরিয়ে আসছে দ্রুত।
জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে,
যদি একবার মুখখানি দেখতে পেতাম তোমার!
আইসোলেশনের বড্ড যন্ত্রণাময় দিনগুলোতে
তোমাকেই খুঁজে ফেরে মন বারে বার।
চলে যাবার আগে হয়তো দেখা হবে না আর,
হবে না কোন কথা,
শুধু জানিয়ে গেলাম আমার এ অসহায় হাহাকার।
**********************************************
[১৩]
মধুরিমাঃ ভালো থেকো
১৫ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:০১
কেমন আছো প্রিয়তমা স্বেচ্ছা বন্দী জীবনে?
ঠিকঠাক আছো তো নিয়মে?
আমি কিন্তু ভালো আছি, নতুন জীবনাচরণে,
এখন তো ঘরে বসেই থাকি।
যদিও মাঝে মাঝে তোমার কথা ভাবি।
তোমাকে না বদলালেও অন্য অনেক অভ্যাস
আমি বদলে নিয়েছি, সময়ের প্রয়োজনে।
তবে কখনো কখনো সিগারেটের নেশাটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে,
তুমি যাকে সতীন বলতে ভালোবাসতে !
তুমি ছেড়ে গেলেও তোমার সতীন আমাকে ছেড়ে যায়নি কখনো।
আর কি করি?
গান শুনি। মুভি দেখি।
ছবি আঁকি মাঝে মাঝে।
আচ্ছা তোমার ওই গালের তিলটা ঠিকঠাক আছে তো।
একটা কথা তো বলাই হলো না,
তুমি না আমায় কবি রুপে দেখতে ভালো বাসতে!
আমি তোমায় নিয়ে ভাবতে ভাবতে,
তোমার আমার সম্পর্ক নিয়ে লিখতে লিখতে ,
কবিতার মতো কিছু একটা লিখে ফেলছি।
ফুরসত পেলে অবশ্যই শোনাবো তোমাকে।
হতে পারে সেটা করোনা মুক্ত পৃথিবীর বিজয় উৎসবে।
ততোদিন খুব করে ভালো থাকা চাই কিন্তু।
মাঝে মাঝে মন খারাপ হলেও ,
এখন আমার সময় কাটে বিশ্রাম নিয়ে,
বিশ্রামেও ক্লান্তি আসে আজকাল!
এই প্রথম বুঝলাম না পাওয়ার আনন্দেই মজা বেশি।
যেমন তোমাকে হারিয়ে আমি......
ও হ্যাঁ তোমাকে তো বলাই হয়নি,আমি দারুণ রান্না শিখেছি।
ঠিক তোমার মতো করে।
মাটন কষা, ছোট মাছ চচ্চড়ি,
সেই সাথে প্লেইন পোলাও।
জানি শুনলে তোমার জিভে জল এসে যাবে।
দেখা হবে যখন, খাওয়াবো, কথা দিলাম।
মুক্ত পৃথিবীতে আবার আমরা প্রেম করে বেড়াবো।
সব ভুলগুলো শুধরে নেবো।
তখন কিন্তু না বলতে পারবে না।
ভালো থেকো মধুরিমা।
***************************************************
[১৪]
মধুরিমাঃ এই আমি
২৫ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:৫২
জানি প্রতি ক্ষণে তোমার গভীর ভালোবাসায় ছিলাম,
এই আমি।
জানি তোমার প্রতি নিশ্বাসের সাথে ছিলাম,
এই আমি।
জানি তোমার প্রতি রাত জাগা রাতের কল্পনায় ছিলাম,
এই আমি।
জানি তোমার প্রতি প্রিয় গল্পের মধ্যমনি ছিলাম,
এই আমি।
এতো চাওয়া, এতো আকুলতা,
এতো প্রেম,এতো ভালোবাসা।
তবে তবু কেন তুমি রয়ে গেলে অধরা?
তবে তবু কেন তুমি রয়ে গেলে রহস্যঘেরা?
জানতে চেয়েও পারিনি জানতে।
কাছে থেকেছি তবু কেন?
পারিনি কাছে টানতে।
তবে কি এ চাওয়ায় ছিলো কোন ফাঁকি?
তোমার ভালোবাসা সব কি তবে মেকি?
বুঝিনি আমি সত্যি বুঝিনি।
একি ভালোবাসা? নাকি ছলনা?
বলনা?
বলোনা মধুরিমা, প্রিয়তমা একটু বলোনা।
উফ! আবার সেই নীরবতা।
আবারও সেই রহস্যময়তা।
তুমি পারোও বটে!
তবু আমি রবো অপেক্ষায়।
***************************************
[১৫]
মধুরিমাঃ আমি তোমায় ভুলতে চাই
১৯ শে মে, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯
তোমায় কি একটু ছুঁয়ে দেখতে পারি মধুরিমা?
হঠাৎ হাসি এলো,
জানি,
জানি সেতো সম্ভব নয়।
পাওয়া না পাওয়ার খেলাতে
সারাটা জীবন,
আমি বরাবরই না পাওয়ার দলে।
হেরো পার্টি আর কি।
আমার জীবনটাই একটা ধোকাবাজির সুদীর্ঘ উপন্যাস কিনা।
কতকাল হয়ে গেলো!
তোমায় ছুঁয়ে দেখা তো দুরের কথা,
চোখের দেখাও দেখতে পেলাম না।
আমাকে হয়তো ভুলে গিয়েছো!
অথবা জোর করে মন থেকে সরিয়ে রেখেছো।
এতো স্মৃতি, এতো গান ,এতো কথকতা।
কিভাবে সম্ভব ভুলে যাওয়া?
কি করে পারলে?
আমায় একটু শিখিয়ে দেবে?
বেঁচে যেতাম তাহলে এ জীবনের মতো।
আচ্ছা,
কিভাবে বুকের দহন ভুলে থাকতে হয়?
কি করে সবচেয়ে প্রিয় মানুষটির জন্য
স্মৃতি কাতর না হওয়া যায়।
কিভাবে সমস্ত অতীত এক নিমেষে
এক ক্লিকে ডিলিট করতে হয়?
ঠিক যেমন করে তুমি আমায় ভুলে গিয়েছো।
যেভাবে আমার স্মৃতি ছুড়ে ফেলেছো।
হ্যাঁ ছুড়ে ফেলেছো।
জানো না হয়তো,
কষ্টের রাতগুলো কতোটা বেদনায় ভরা।
সুতীব্র উল্লাস ধ্বনি সহ নিত্য কুরে কুরে খায়
আমার হৃদয় মন্দির।
নিয়মিত এখনো নিয়মিত।
আমি একটু শান্তি পেতে চাই।
আমি একটু ঘুম জড়ানো রাত পেতে চাই।
তুমি এমন কেন? কেন এমন?
কেন তুমি এলে এ জীবনে?
আবার চলে গেলেও হ্যালির ধুমকেতুর মতো।
কেন?
কোথায় হারালে ? কোথায়?
খুঁজে খুঁজে আমি হয়রাণ।
আমি আর খুঁজতে চাই না তোমায়।
আমি আর ছুঁতেও চাই না তোমায়।
আমি আর চোখের দেখা দেখতেও চাই না তোমায় ।
আমি তোমায় ভুলতে চাই,
ভুলতে চাই।
ভুলতে চাই।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন