শনিবার, ২৩ মে, ২০২০

মে ২০২০ সংকলন

ক্ষুধা
*******
এক মুঠো ভাত দেবেগো মা ?পেটে বড্ড ক্ষুধা ।
পয়সা হলেও অসুবিধা নেই, দাও না গো দাদা।
দুদিন ধরে খেয়েছি কেবল, পানি আর একমুঠো মুড়ি।
অনেক তো আছে কমবেনা দিলে,বাসি ভাত তরকারী।
রোদে পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি, নেই তাতে কোন দুখ।
ক্ষুধা জ্বালা বড় জ্বালা, অসহ্য মারাত্মক অসুখ।
দালান চাই না ,চাইনা গো ভাই, তোমাদের দামি পোষাক।
দু”মুঠো দাও, তাতেই খুশি, সুখ তোমাদেরই থাক।
#সামনে ইদ আমরা কি ভাবছি এসব ছিন্নমুল মানুষের কথা।
****************************************************************
সার্থকতা
************
জীবনের এতোটা পথ হেটে এসে
পেছন ফিরে দেখি আমি একা।
চলার পথে যারা ছিল অতি আপনজন
তারা সকলে প্রয়োজন মিটতেই,
হারিয়েছে দূরে কোথাও ।
কষ্ট পাইনা,কষ্ট পেতে পেতে
কষ্ট কি সেই অনুভূতিটুকুও নষ্ট হয়ে গেছে।
তারপরেও সহায় কেউ থাকলে
মনের জোর টুকু বাড়তো।
বেলা শেষে ভালোবাসার অবলম্বন টুকু যে বড্ড প্রয়োজন!
এখন খুব সহজেই ঠান্ডা গরমে হাঁপানির টান ওঠে।
উঠতে বসতে গাঁটে গাঁটে ব্যথা।
চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এলো প্রায়।
কানও বিভ্রান্ত কখনো কখনো।
পথ চলতে পা টলে সহজে।
আরো কত কি!
এতো দিনের বিনিময় মূল্য ভালোই পেলাম
জীবনের কাছ থেকে।
একটু আদর আহ্লাদ
একটু সহানুভূতি, একটু ভালোবাসা।
সব মনে হয় রূপকথা, অলীক স্বপ্ন।
তবু বেঁচে আছি।
বাঁচতে ভালোবাসি।
এখানেই হয়তো জীবনের সার্থকতা।
*************************************************************
আমফান
*********
মেঘেরা ভেসে ভেসে
ডানা মেলে পাখা।
ছুটোছুটির ব্যস্ততা
দূরে একা একা।
দানবীয় শক্তিতে
সমুদ্র উত্তাল।
নাগরিক জীবনের
অবস্থা বেহাল।
পত্র পল্লব সব
মাথা দুলে দুলে।
অসহায় সমর্পণ
প্রকৃতির কোলে।
আকষ্মিক জোয়ারে
ভাসে বাড়ি ঘর।
স্বাভাবিক জীবন কি
ফিরবে এরপর?
নীড় হারা পাখিদের
ছোটাছুটি ভয়ে।
কোথা যাবে এরপর
শেষ আশ্রয়ে?
মাঠের ফসল যত
নিমেষেই শেষ।
গৃহস্থের চোখে জল
দুঃখ অনিঃশেষ।
অসহায় প্রানীকুল
ভয়ে কেঁপে সারা।
আশ্রয়ের খোঁজে
ক্ষিপ্ত দিশেহারা।
হুড়মুড় বৃষ্টির
মহাতান্ডবে।
সকলের সুখ সাধ
এবার ফুরাবে।
কোন কোন দূর্যোগ
কারো কারো তরে।
সৌভাগ্য বয়ে আনে
ধরনীর উপরে।
দশেরে দিয়ে লাথি
কেউ ধনী হয়।
নিঃস্ব আরও ক্রমশ
হয় অসহায়।
আমফান তুমি
ছাড়ো রুদ্র মুর্তি।
অসহায়ের পক্ষ হতে
রইলো এ আর্তি।
************************************************


********************************************************

তুই

তুই আমার কবিতা হবি
স্বপ্ন দেখার মতো?
ইচ্ছে মতো সাজিয়ে নেবো
যত খুশি তত।
মাঝে মাঝে পড়বো তোকে
পাতা খুলে খুলে।
নানা স্মৃতি নানা কথায়
হৃদয় উঠবে দুলে।
হবি কি তুই বাঁশের বাঁশি
বুকের টানা দম?
তোকে আমি সুরে সাজাবো
নানান রকম।
হবি নাকি গল্প কোন
ভীষণ রকম প্রেমে ।
আলতো ছোঁয়ায় গাঁথবো
চমৎকার ফ্রেমে।

© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক  

******************************************

বৃষ্টি তোমায় ভালোবাসি নিজের মতো করে
******************************************
এলোমেলো অনুভূতি
পূর্ণ কলেবর জুড়ে ,
ফিরলে আবার তুমি
নিজের মতো করে।
ছুঁয়ে গেলে প্রতি ফোঁটায়
উল্লসিত মন,
বহুদিনের পর যেন
ফিরলো আপনজন।
এমন করে দিক ভুলে
এলে তো বেশ হয়,
উষ্ণদিনে তোমার অযোগ
কাটেনা সময়।
বৃষ্টি তোমায় ভালোবাসি
নিজের মতো করে,
খোলা ছাদে দাড়িয়ে থাকি
তোমার বিরহে।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
**********************************************

মেঘ ভাসি দিন
স্বপ্ন রঙিন।
স্মৃতির কাব্য লেখে
মনের গহীন।
কোথা তুমি মন
ব্যস্ত জীবন।
হেরে গেছি ভেবোনা
লড়ছি এখন।
ছিলো যত ভুল
ঝরা বকুল
সব শেষে ফোটে ফের
নতুন মুকুল।
আধারের গান
হোক অবসান।
নব রবি ঊষালগ্নে
হাসে অম্লান।
************************************************************
রম্য কবিতা ১
**************
কত রাত জেগে জেগে
লিখেছিনু পদ্য
বউ বলে কিযে করো
এতো সব গদ্য।
আমি বলি বুঝবে না
অরবাচীন মূর্খ।
শুধু শুধু এই রাতে
করো কেন তর্ক।
বুঝবোনা বলো কেন
জানি না করো কি?
ফেসবুকে রাতদিন
মেয়েদের দেখা দেখি।
শুনে আমি বলবোকি
হই বাকরুদ্ধ।
চুপচাপ শুয়ে পড়ি
চাই নাকো যুদ্ধ।
**********************************************************
(১)
শুনশান নীরবতা
চারদিক চুপচাপ।
একমনে সুর তোলে
বৃষ্টির টুপটাপ।
(২)
আয়রে তোরা দেখবি যদি
আয়রে সকল আয় ছুটে।
হেলেদুলে নেচেকুদে
যাচ্ছে কেমন ঝাঁকামুটে।
(৩)
ছোট্ট খোকন ভর দুপুরে
এদিক ওদিক পান ধায়।
অবশেষে সত্যি কি সে
রাজকন্যার দেখা পায়?
(৪)
পটল লতা পটল লতা
ফুলটি তোমার সাদা রং।
কেন তুমি রঙিন নও
কেন তুমি দেখাও না ঢং।
*********************************************************
কানামাছি খেলা
***************
এমন হাসি হাসো কেন?
আমি হয়ে যাই মুগ্ধ।
এমন ব্যথা দাও কেন?
আমি পুড়ে হই দগ্ধ।
তোমার চুলের মিষ্টি গন্ধ
দোলনচাঁপা ফুল যেন।
তোমার আমার সম্পর্কটা
এমন লুকানো কেন?
কবে তুমি ছাড়বে বলো
এমন লুকোচুরি খেলা।
ভাল্লাগেনা সত্যি বলছি
অসহ্য এ ঝামেলা।
© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক
********************************************

গীতি কবিতা- ৪

বলবো কি করে দ্বিধা ছিলো, আমি বলিনি। তুলবো তুলবো করে, ছবিও তুলিনি। ক্যানভাসে আঁকবো বলে, মনে আঁকিনি। বুকের ভিতর আছো ভেবে, স্মৃতিতে রাখিনি। কে তুমি নন্দিনী, ভাবনায় আসো যাও। বিরহ জ্বালায় জ্বালিয়ে, আমাকে পোড়াও। প্রিয়তম হতে চাই, ভালোবাসা দাও। স্বপ্নে জাগরণে, কাছে টেনে নাও। রাখিনি তোমায় আমি, স্মৃতিতে রাখিনি। তুলবো তুলবো করে, ছবিও তুলিনি। এলোকেশী বলোনা, নাম বলো না। পরিচিত হতে চাই নয়তো ছলনা । কাছে আসো ভালোবাসো, দাও ধরা দাও। নিবিড় করে আমায় তুমি কাছে টেনে নাও। মনের মধ্যে রাখবো তোমায়,সৃতিতে আঁকবো। বলবো তোমায় মনের কথা পাশে থাকবো। বলবো কি করে দ্বিধা ছিলো, আমি বলিনি। তুলবো তুলবো করে, ছবিও তুলিনি। ক্যানভাসে আঁকবো বলে, মনে আঁকিনি। বুকের ভিতর আছো ভেবে, স্মৃতিতে রাখিনি। [sb]© রফিকুল ইসলাম ইসিয়াক[/sb]

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন