[১]
বাসে যেতে যেতে হঠাৎ চোখে চোখ পড়ে গেলো মেয়েটির। মনে হলো আমার দিকে সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চিনি কি আমি তাকে? আমি তাকাতেই সে দৃষ্টি ঘুরিয়ে নিলো অনত্র। আপাদমস্তক ইসলামী পোষাকে ঢাকা, শুধু চোখ দুটো দেখা যায়। এত মায়া মায়া দৃষ্টি যে কি আর বলবো আমার চোখ দুটো খুব সহজেই আটকে গেলো তার দিকে। আবার ফিরে তাকাতেই আমার চোখে তার চোখাচোখি হয়ে গেল। মনে মনে ভাবলাম পরিচিত না হয়ে যায়না। কিন্তু মেয়েটি কে ? ঠিক ধরতে পারলাম না। আবারো তাকালো মেয়েটি, কয়েক সেকেন্ড মাত্র, মেয়েটি চোখ সরিয়ে নিলো। ভাবলাম ওর সাথে কথা বলতে হবে। কিন্তু বাসে প্রচন্ড ভীড়। কিছু বলার আগেই মেয়েটি হঠাৎ উধাও হয়ে গেলো্। মনটা সারাদিন খচখচ করতে লাগলো। সত্যি কি আমি ওকে চিনি? কে মেয়েটি? আমার দিকে অমন গভীর দৃষ্টিতেই বা তাকিয়ে ছিলো কেন? কিছু কি বলতে চায়?
এরপর অনেক কটা দিন পার হয়ে গেছে। প্রতিদিনের ব্যস্ততায় আমিও ব্যস্ত হয়ে পড়লাম স্বাভাবিক নিয়মে। চলতি পথে প্রতিনিয়তই তো মানুষের জীবনে কত ঘটনা ঘটে। কে আর কয়টি মনে রাখে। আমিও এই সামান্য এই সামান্য ঘটনা ভুলে গেলাম স্বাভাবিক নিয়মে।
এরপর অনেক কটা দিন পার হয়ে গেছে। প্রতিদিনের ব্যস্ততায় আমিও ব্যস্ত হয়ে পড়লাম স্বাভাবিক নিয়মে। চলতি পথে প্রতিনিয়তই তো মানুষের জীবনে কত ঘটনা ঘটে। কে আর কয়টি মনে রাখে। আমিও এই সামান্য এই সামান্য ঘটনা ভুলে গেলাম স্বাভাবিক নিয়মে।
বেশ অনেকদিন পরের কথা আমি গেছি মার্কেটে একটা চটি কিনবো বলে। বর্তমান চটি জোড়া ছিড়ে গেছে বেশ অনেকদিন হলো। কোনরকমে জোড়া তালি দিয়ে চালাচ্ছিলাম আজ আবারো ছিড়ে যাওয়াতে নতুন একজোড়া কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম। একটু হেঁটে লিবার্টি সু এর দোকানে ঢুকতেই দেখলাম সামনের সারিতে বসে জুতো পছন্দ করছে একটি মেয়ে। কেন জানি মেয়েটির মুভমেন্টে চোখ আটকে গেলো। আমি দাড়িয়ে পড়লাম্। সেই মেয়েটি না ?
হ্যাঁ সেই তো, বেশ কাকতালীয় ব্যাপার। অপেক্ষা করলাম, মেয়েটির মুখ আজ ভালো করে দেখতে ই হবে। জানতে হবে কেন সে ওইদিন ওভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
কিছু সময় যেতেই মেয়েটি তার কাজ শেষ করে মুখ তুলে চাইলো।
আর মুখ তুলে চাইতেই একেবারে চোখাচোখি আমার সাথে। আমি ও একটু ও সময় ব্যয় না করে হড়গড়িয়ে বলে ফেললাম,
-মাফ করবেন আপনার নামটা জানতে পারি প্লিজ?
হ্যাঁ সেই তো, বেশ কাকতালীয় ব্যাপার। অপেক্ষা করলাম, মেয়েটির মুখ আজ ভালো করে দেখতে ই হবে। জানতে হবে কেন সে ওইদিন ওভাবে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো।
কিছু সময় যেতেই মেয়েটি তার কাজ শেষ করে মুখ তুলে চাইলো।
আর মুখ তুলে চাইতেই একেবারে চোখাচোখি আমার সাথে। আমি ও একটু ও সময় ব্যয় না করে হড়গড়িয়ে বলে ফেললাম,
-মাফ করবেন আপনার নামটা জানতে পারি প্লিজ?
মেয়েটি কেমন যেন একটু বিচলিত হলো। স্বাভাবিক ভাবে সে বেশ ঘাবড়ে গেল মনেহয়। একটু অপ্রস্তুত হলো বই কি।অন্তত তার চেহারায় তা স্পষ্ট হয়ে উঠলো। ইতস্তত করে আনত নয়নে বলল,
– আপনি কে? আপনাকে তো আমি চিনি না। অপরিচিত কাউকে আমার নাম বলবো কেন?
– আপনি কে? আপনাকে তো আমি চিনি না। অপরিচিত কাউকে আমার নাম বলবো কেন?
-সে ঠিক আছে, তবে আমার কেন যেন আপনাকে খুব চেনা চেনা লাগছে।
মেয়েটি বেশ কেটে কেটে উত্তর দিলো,আপনাকে আমার একটুও চেনা লাগছে না। স্যরি।
আমি মরিয়া হয়ে জানতে চাইলাম,
আচ্ছা চেনা হোক বা অচেনা নামটা জানাতে দোষ কি?
-আচ্ছা নাছোড়বান্দা তো আপনি ,পথ ছাড়ুন। আমায় যেতে হবে।
আমি আহত হৃদয়ে পথ ছেড়ে দিলাম।লোকজন খেয়াল করছে।অন্যকোন রকম পরিস্থিতি হোক আমি ও তা চাই না। বিচিত্র ভাবনায় মনটা হঠাৎ বিক্ষিত হয়ে গেলো।
মেয়েটি বেশ কেটে কেটে উত্তর দিলো,আপনাকে আমার একটুও চেনা লাগছে না। স্যরি।
আমি মরিয়া হয়ে জানতে চাইলাম,
আচ্ছা চেনা হোক বা অচেনা নামটা জানাতে দোষ কি?
-আচ্ছা নাছোড়বান্দা তো আপনি ,পথ ছাড়ুন। আমায় যেতে হবে।
আমি আহত হৃদয়ে পথ ছেড়ে দিলাম।লোকজন খেয়াল করছে।অন্যকোন রকম পরিস্থিতি হোক আমি ও তা চাই না। বিচিত্র ভাবনায় মনটা হঠাৎ বিক্ষিত হয়ে গেলো।
মেয়েটিও আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে অকস্মাৎ জোরে ছুট লাগালো এক নিমেষে। এরকম পরিস্থিতি হতে পারে আমি কখনো কল্পনা করতে পারি নি । মেয়েটির আচরণ বড়ই অদ্ভুত।
সেলসম্যান মনে হলো আমার প্রতি চরম বিরক্ত হয়েছে ।সে বিরক্তি নিয়ে জানতে চাইলো আমার কি লাগবে।
ততক্ষণে আমার কিছু কেনাকাটা করার ইচ্ছাটাই উবে গেছে। আমি বিহ্বল হয়ে শুধু মেয়েটির পথের পানে চেয়ে রইলাম।কে মেয়েটিি ?এমন লুকোচুরি খেলছে কেন সে আমার সাথে? কি চায় সে? নাকি কিছুই চায় না। সব আমার মনের কল্পনা।
নাহ! ভুল তোআমার হবার কথা নয় । শুধু শুধু মেয়েটিকে চেনাই বা লাগবে কেন?আমার তো এমন হয় না। নিশ্চয় এ আমার ভুল নয়্।
বারবার মন বলছে আমি মেয়েটিকে চিনি, আমি অবশ্যই এই মেয়েটিকে চিনি।কিন্তু কিছুতেই এই মেয়ের সাথে স্মৃতিগুলো মনে করতে পারছিনা। কোথায় যেন দেখেছি …কোথায়?
চটি না কিনেই বাড়ি ফিরে এলাম তাড়াতাড়ি। মনটা আজ প্রচন্ড অশান্ত।বারেবার স্মৃতির ডায়েরী উল্টে পাল্টে একাকার ,কে মেয়েটি?আমি সাধারণত সিগারেট খাই না ।আজ সিগারেট ধরলোম একের পর এক। হেড অফিস বার কয়েক উকি ঝুকি মারলেও আমাকে বিরক্ত করলো না। সে সবসময় আমাকে ভালো বোঝে।অকারণ জ্বালাতন সে কখনো করে না।বারান্দায় হাটাহাটিতে রাত প্রায় শেষ হয়ে এলো।কখন জানি দুচোখ জুড়ে গভীর ঘুম চলে এলো্ নিজেই জানি না ঘুম ভাঙলো অনুপমার হাঁকডাকে।
সেলসম্যান মনে হলো আমার প্রতি চরম বিরক্ত হয়েছে ।সে বিরক্তি নিয়ে জানতে চাইলো আমার কি লাগবে।
ততক্ষণে আমার কিছু কেনাকাটা করার ইচ্ছাটাই উবে গেছে। আমি বিহ্বল হয়ে শুধু মেয়েটির পথের পানে চেয়ে রইলাম।কে মেয়েটিি ?এমন লুকোচুরি খেলছে কেন সে আমার সাথে? কি চায় সে? নাকি কিছুই চায় না। সব আমার মনের কল্পনা।
নাহ! ভুল তোআমার হবার কথা নয় । শুধু শুধু মেয়েটিকে চেনাই বা লাগবে কেন?আমার তো এমন হয় না। নিশ্চয় এ আমার ভুল নয়্।
বারবার মন বলছে আমি মেয়েটিকে চিনি, আমি অবশ্যই এই মেয়েটিকে চিনি।কিন্তু কিছুতেই এই মেয়ের সাথে স্মৃতিগুলো মনে করতে পারছিনা। কোথায় যেন দেখেছি …কোথায়?
চটি না কিনেই বাড়ি ফিরে এলাম তাড়াতাড়ি। মনটা আজ প্রচন্ড অশান্ত।বারেবার স্মৃতির ডায়েরী উল্টে পাল্টে একাকার ,কে মেয়েটি?আমি সাধারণত সিগারেট খাই না ।আজ সিগারেট ধরলোম একের পর এক। হেড অফিস বার কয়েক উকি ঝুকি মারলেও আমাকে বিরক্ত করলো না। সে সবসময় আমাকে ভালো বোঝে।অকারণ জ্বালাতন সে কখনো করে না।বারান্দায় হাটাহাটিতে রাত প্রায় শেষ হয়ে এলো।কখন জানি দুচোখ জুড়ে গভীর ঘুম চলে এলো্ নিজেই জানি না ঘুম ভাঙলো অনুপমার হাঁকডাকে।
[২]
অনুপমা যখন হাঁক ডাক করে অস্থির হয়ে যাচ্ছিলো তখন আমি ছিলাম স্বপ্নের ঘোরে। সেই স্বপ্নের ঘোরে আমি যেন ফিরে পেলাম আমার হারানো অতীত। যাকে আমি সযতনে পাথর চাপা দিয়ে রেখেছি দীর্ঘ অনেকগুলো বছর। যাকে আমি ভুলতে চেয়েছিলাম অনেক যত্ন করে। মাঝে মাঝে কোন কোন স্মৃতি ফিরে এলে বিব্রত হতে হয়, হৃদয় আহত হয়। আমিও তেমনি আহত হলাম আবারো। কিন্তু অতীতকে কি করে অস্বীকার করবো?
সাল তারিখ কত ছিল ঠিকঠাক মনে নেই এই মুহুর্তে, তবে ঘটনাগুলো একে একে মনে পড়ে গেলো স্পষ্ট। যেন কোন চলচ্চিত্রের ভাসমান চিত্রকথা।
সাল তারিখ কত ছিল ঠিকঠাক মনে নেই এই মুহুর্তে, তবে ঘটনাগুলো একে একে মনে পড়ে গেলো স্পষ্ট। যেন কোন চলচ্চিত্রের ভাসমান চিত্রকথা।
আমাদের পরিবারটি ছিলো গতানুগতিক মধ্যবিত্ত পরিবার। যা উপার্জন তার বেশি ব্যয়। বাবার ছিলো প্রাইভেট কোম্পানির চাকরি। বেতন যা পান তাতে সংসার চলে না। মায়ের নিত্য ঘ্যানঘ্যান ,ঝগড়া ঝাটি চলতেই থাকে। নানান অশান্তিতে নিমজ্জিত পরিবার। মাঝে মাঝে মনে হয় এই পরিবার থেকে দূরে চলে যেতে পারলে ভালো হতো। তবে কখনোই চলে যাওয়া হয় না অবশ্য। কি এক অদৃশ্য টানে দিন শেষে ফিরে আসতাম বার বার।
বড় দুই বোনের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে দ্রুত। আমার লেখাপড়ার খরচ। বোনেদেরও লেখা পড়ার খরচ আছে। মায়ের ওষুধ বাবার চোখের চিকিৎসা খরচ। সাথে সংসারের খরচ তো আছেই। কি এক তালগোল অবস্থা। নুন আনতে পানতা ফুরায় আরকি।
তখন আমি বিয়ে অনার্সএ পড়ি। পড়াশোনার ফাঁকে কটা টিউশনি করি। এই সল্প টাকা থেকে আবার মাকে কিছু টাকা দেই আর নিজের বাজে খরচের জন্য রাখি বাকি টাকা। সেখান থেকে বোনেরা আবার কিছু ভাগ বসায়। আমিও না দিয়ে পারি না। হাজার হলেও বোন, ওদেরও চাওয়া পাওয়ার জগতটা অত্যন্ত সীমিত। অল্পতে খুশী থাকে সবসময়। খুব লক্ষী টাইপের মেয়ে। কিছু চাইলে আমি না করি না একটু আবদার মেটাই। অভাবের সংসারে তাদের কোন বায়না বা আবদার কোন দিনই পূরণ হয় না তেমন একটা।
এসবের মধ্যে মা প্রায় ঘ্যান ঘ্যান করে, একটা চাকরি বাকরি জুটাতে পারি কিনা। কিন্তু লেখাপড়া শেষ করাটা আমার জন্য জরুরী। মাকে সেটা বোঝালে ও মানতে চান না কিছুতেই। সংসারের হাল ধরতে তাগাদা দেন বারবার। অনুযোগের সুরে বলেন বাবার সাথে ঝগড়াঝাটি করতে করতে তিনিও ক্লান্ত, তিনি আর পারছেন না। আমার অনেক দায় দায়িত্ব আছে। বোনেদের বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। আমার উচিত সংসারের হাল ধরা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি শুনি আর অসহায় বোধ করি। দুচোখে অন্ধকার দেখি। মানুষের জীবনটা এতো কঠিন কেন? কেন এতো অভাব। এসব ভেবে ভেবে মাঝে মাঝে মাথা ধরে যায়। কুল ও পাই না সমাধান ও পাই না। অতিরিক্ত চিন্তায় পড়াশোনায় মন বসানো দায় যেতে লাগলো।
যাহোক নানা ঝামেলার মধ্যেও আমার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো। পরীক্ষাটাও মোটামুটি ভালো দিলাম। কিছুটা অবসর সময় এলো আমার জীবনে এবং হঠাৎ করে আশ্চর্য সুন্দর এক মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লাম।
মেয়েটির নাম সুলেখা। একদিন পার্কে বসে আছে একা একা সে। কেন বসে আছে তা অবশ্য জানিনা, কিন্তু কিছু উটকো ছেলে বিভিন্ন কমেন্ট করছে তাকে নিয়ে। সেটি আমার নজর এড়ালো না। মেয়েটি বেশ ভয় পাচ্ছে বোঝা গেলো। সময়টা যদিও বিকেল। আমি কি মনে করে এগিয়ে গেলাম। জানতে চাইলাম কেমন আছেন? এমনটা কেন করলাম নিজেই জানিনা। যদিও মেয়েটির আমার পূর্ব পরিচিত নয় তবু কেন যেন সানন্দে সাড়া দিলো পাশে বসতে আহ্বান করলো। উটকো ছেলেগুলো কেটে পড়লো শিঘ্রী। আমি চলে আসতে উদ্যত হলে মেয়েটি বললো চলে যাচ্ছেন যে বসুন। আজ আপনি আমার অনেক উপকার করলেন। সেই শুরু…..।
ইদানিং নিজের কাজ হয়ে গেলেও আমি কখনোই ঠিক সময়ে বাসায় যাই না। এদিক ওদিক থাকি। বিশেষ করে বাসার কাছাকাছি পার্কটাতে বসে সময় কাটাই না হয় গল্পের বই পড়ি। মায়ের ঘ্যান ঘ্যান অসহ্য মাত্রায় বেড়েছে।
সুলেখাও ও আমার মতো অভাবী পরিবারের। সৎবাবার সংসারে থাকে। অনেকগুলো ভাইবোন। বাবার বাজে ব্যবহার। তার নানা কষ্টের কাহিনী আমি শুনি আর আপ্লুত হই তার দুঃখ কষ্টে। আস্তে আস্তে তার প্রতি এক গভীর মমতা অনুভব করতে লাগলাম। তাকে না দেখলে। কথা না বললে মনের মধ্যে একটা অস্থিরতা অনুভব করলাম। তাকে নিয়ে নানা দুঃচিন্তা হতে লাগলো। তাকে ছাড়া অন্য সময়গুলোতে কিছু ভালো লাগতো না। কেন এমন হতো কে জানে? একে কি প্রেম বলে?
আমার মধ্যে উলটাপালটা কি জানি কি দেখলো জানি না। মায়ের ঘ্যান ঘ্যান আরো বেড়ে গেলো। বাসার পরিবেশ ক্রমশ আরো অসহ্য হয়ে উঠলো। আমাদের অবাক করে দিয়ে এর মধ্যে বড় বোন অজানা অচেনা এক ছেলের হাত ধরে পালিয়ে গেল। পাড়া প্রতিবেশিরা আমাদের প্রায় এক ঘরে করে দিলো। নানা কথা শোনাতে লাগলো উঠতে বসতে।নরকের মতো পরিবেশ তৈরি হলো বাসায়।
তারপরেও ভালোই চলছিলো একরকম যদিও মায়ের কানে আমার প্রেমের কথা পৌছে গেছে ইতিমধ্যে কিন্তু আমি ডোন্ট কেয়ার টাইপের ভাব দেখাই। এত সাহস কোথায় পেলাম জানিনা। সবকিছু সরাসরি অস্বীকার করি। আমি খুব খেয়াল করে দেখেছি আমার কপালে কোন সুখ স্থায়ী হয় না। কোন ভালো আমার জীবনে থাকে না। পোড়া কপাল আর যাকে বলে।
এবারও আমার এই ছোট্ট সুখটুকু স্থায়ী হলো না। এক সকালে সুলেখা জানালো তার বিয়ে ঠিক করেছে তার সৎবাবা। পাত্র বেশ বড় ব্যবসায়ী। আমি তো চিন্তায় পড়ে গেলাম। পালিয়ে বিয়ে করবো সে সাহস বা যোগ্যতা আমার নাই। আবার বাড়িতে এসেও দেখলাম আরেকটি দুঃসংবাদ আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম।
দুপুরে ভাত খেতে বসেছি যথারীতি মা খাবার বেড়ে দিতে লাগলেন। আমি মুখ বুজে প্রতিদিনকার মতো খাচ্ছি কারণ মায়ের সাথে ইদানিং আমার সম্পর্ক ভালো না। তাই আমি মায়ের সাথে খুব প্রয়োজন ছাড়া কথা বলি না। মা ই একতরফা ঘ্যান ঘ্যান করেন। আমি আগে মুখ চালালেও এখন আর কোন উত্তর দেই না খানিকটা গা সওয়া হয়ে গেছে। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো মা আজ আর কোন ঘ্যান ঘ্যান করছে না। খুবই মিষ্টি স্বরে কথা বলছেন। আরো অবাক হয়ে দেখলাম আমার প্রিয় সব তরকারী রান্না হয়েছে। মায়ের মন ভালো দেখে আমি সাহস করে বললাম,বাসায় কি কেউ আসবে?
– না কেন?
-এতো রকম রেধেছো?
-বাহ আমি কি তোর জন্য একটু ভালো কিছু রাঁধতে পারিনা! আমি এতোই খারাপ।
-সে কথা বলছি না মা। অনেকগুলো টাকা খরচ করলে তো তাই মাসের শেষ।
-আজ তোর জন্মদিন। মনে আছে?
-ও তাই বুঝি এতো আয়োজন।
-তোরা মনে করিস আমি তোদের কোন খেয়াল খবর রাখিনা। তোদের প্রতি আমার কোন দায় দায়িত্ব নাই। আমি তোদের দেখতে পারিনা। সেই একজন তো কার না কার হাত ধরে কেটে উঠলো, একবারো আমদের কথা ভাবলো না। আমাদের সম্মানের কথা ভাবলো না। মানুষ এখন যা নয় তাই বলাবলি করে। আমার আর ভালো লাগে না। এই সংসার আমার কাছে বিষের মতো। শুধু অভাব আর অভাব। তোর কবে যে একটা চাকরি হবে সেদিন যদি একটু অভাবটা কমে। মায়ের চোখ ভিজে আসে। মায়ের কথায় আমার ও মনটা হু হু করে ওঠে।
-এতো রকম রেধেছো?
-বাহ আমি কি তোর জন্য একটু ভালো কিছু রাঁধতে পারিনা! আমি এতোই খারাপ।
-সে কথা বলছি না মা। অনেকগুলো টাকা খরচ করলে তো তাই মাসের শেষ।
-আজ তোর জন্মদিন। মনে আছে?
-ও তাই বুঝি এতো আয়োজন।
-তোরা মনে করিস আমি তোদের কোন খেয়াল খবর রাখিনা। তোদের প্রতি আমার কোন দায় দায়িত্ব নাই। আমি তোদের দেখতে পারিনা। সেই একজন তো কার না কার হাত ধরে কেটে উঠলো, একবারো আমদের কথা ভাবলো না। আমাদের সম্মানের কথা ভাবলো না। মানুষ এখন যা নয় তাই বলাবলি করে। আমার আর ভালো লাগে না। এই সংসার আমার কাছে বিষের মতো। শুধু অভাব আর অভাব। তোর কবে যে একটা চাকরি হবে সেদিন যদি একটু অভাবটা কমে। মায়ের চোখ ভিজে আসে। মায়ের কথায় আমার ও মনটা হু হু করে ওঠে।
– আমি চেষ্টা করছি মা।
-খোকা, আমি বলি কি আমার একটা কথা ছিলো। তুই যদি আমার একটা কথা মানিস।
-কি কথা?
-আমি তো সব বুঝি তোর একটা চাকরি দরকার। বিয়ের বয়সও হয়ে গেছে। ঘরে এখনো একটা বোন, তোর চাইতে আমার চিন্তা বেশি। তোর জন্য একটা ভালো প্রস্তাব আসছে। খুব ভালো প্রস্তাব। তোর চাকরি বিয়ে ছোটবোনের বিয়ে সব সমাধান হয়ে যাবে। যদি তুই হ্যাঁ বলিস।
আমার লজ্জা পাওয়া উচিত কিন্তু আমি লজ্জা পেলাম না। জানতে চাইলাম কে প্রস্তাব দিলো্।
–তুই কি আমার কথা শুনবি? তুই নাকি কার সাথে ঘুরে বেড়াস। এক চোখ না অনেক চোখেই দেখেছে। একজন বললে আমি বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু এতজনের কথা অবিশ্বাস করবো কেমন করে।
-মা সুলেখা খুব ভালো মেয়ে।
আমি এক দমে বলে ফেললাম। আমি জানি এখন না বললে আর কোনদিন বলতে পারবো না।
মা আমার দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে রইলো। তার মুখে একরাশ হতাশা ও অসহায়ত্বের ছাপ স্পষ্ট। মাকে কোনদিন এমন রূপে আমি দেখিনি। আমি খানিকটা ভয় পেয়ে গেলাম। মা মুখ শক্ত করে বলল,
-তুই যদি অন্য কোন চিন্তা মাথায় আনিস তবে আমি বিষ খাবো। বিষ আনিয়ে রাখছি।
মায়ের কথায় আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার গা হাত পা কাঁপতে লাগলো।
-খোকা, আমি বলি কি আমার একটা কথা ছিলো। তুই যদি আমার একটা কথা মানিস।
-কি কথা?
-আমি তো সব বুঝি তোর একটা চাকরি দরকার। বিয়ের বয়সও হয়ে গেছে। ঘরে এখনো একটা বোন, তোর চাইতে আমার চিন্তা বেশি। তোর জন্য একটা ভালো প্রস্তাব আসছে। খুব ভালো প্রস্তাব। তোর চাকরি বিয়ে ছোটবোনের বিয়ে সব সমাধান হয়ে যাবে। যদি তুই হ্যাঁ বলিস।
আমার লজ্জা পাওয়া উচিত কিন্তু আমি লজ্জা পেলাম না। জানতে চাইলাম কে প্রস্তাব দিলো্।
–তুই কি আমার কথা শুনবি? তুই নাকি কার সাথে ঘুরে বেড়াস। এক চোখ না অনেক চোখেই দেখেছে। একজন বললে আমি বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু এতজনের কথা অবিশ্বাস করবো কেমন করে।
-মা সুলেখা খুব ভালো মেয়ে।
আমি এক দমে বলে ফেললাম। আমি জানি এখন না বললে আর কোনদিন বলতে পারবো না।
মা আমার দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে রইলো। তার মুখে একরাশ হতাশা ও অসহায়ত্বের ছাপ স্পষ্ট। মাকে কোনদিন এমন রূপে আমি দেখিনি। আমি খানিকটা ভয় পেয়ে গেলাম। মা মুখ শক্ত করে বলল,
-তুই যদি অন্য কোন চিন্তা মাথায় আনিস তবে আমি বিষ খাবো। বিষ আনিয়ে রাখছি।
মায়ের কথায় আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার গা হাত পা কাঁপতে লাগলো।
[৩]
মা হঠাৎ করে এমন একটা প্রস্তাব দেবে আমার কল্পনাতেও ছিলো না। মায়ের প্রস্তাবের উত্তরে কি বলবো কি করবো আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না। আর মায়ের কথার অবাধ্য ও আমি কখনো হইনি। মায়ের অগোচরে ও আমি কখনো কিছু করিনি। যা বাকি ছিলো বলার সেটাও আমি বলে দিয়েছি এখন। বলে দিয়েছি যে আমি সুলেখাকে ভালোবাসি।
ঘটনার আকষ্মিকতায় আমি হতবিহ্বল। এতো রকমের মজার মজার খাবার, তবু গলা দিয়ে একটু খাবার নামলো না। কথাও যেন হারিয়ে গেলো মুখ থেকে। পুরো পৃথিবীটা যেন দুলে উঠলো হঠাৎ করেই। মনের মধ্যে থাকা স্বপ্ন গুলো ভেঙে গেলো টুকরো টুকরো হয়ে। আরো আঘাত পেলাম আমার অবাধ্যতায় মা বিষ খাবে জেনে।
বরাবরই আমার মা খুব বেশি পরিমান জেদী। আমি জানি কথার নড়চড় হলে তিনি সত্যি সত্যি একটা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলবেন। মা যে এমন কথা বলতে পারেন আমি অবশ্য কোনদিন কল্পনাও করতে পারিনি। নানা চিন্তায় মাথা ধরে গেল মুহুর্তে। মায়ের ডাকে আবার সংবিত্ ফিরে পেলাম।
-কি হলো, কি চলছে মনের মধ্যে,কি এত ছাইপাশ ভাবছিস?
আমি মাথা নাড়লাম।
-ওসব উলটা পালটা মেয়ের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। ওসব মেয়েদের আমি খুব চিনি। সব খোঁজ খবর আছে আমার কাছে। তোর জন্য যার কথা ভেবেছি সে অতি রুপসী গুণবতী। একসাথে রাজকন্যা ও রাজত্ব সব পাবে। সারাজীবন রাজার হালে থাকতে পারবে।
-মা,আমার রুপসী গুণবতী মেয়ে চাই না। রাজকন্যা ও রাজত্ব ও চাই না।
-এখন তুমি মোহে আছো। আমার কথা এখন তেতো লাগছে। মোহ দিয়ে জীবন চলে না। সুযোগ সবসময় আসে না। আর যেনো আমি তোর ভালোই চাই। আর শোন কি চাই আর কি চাইনা সে আমি বুঝবো।
অনেক কষ্ট করেছি সারা জীবন এবার একটু সুখের মুখ দেখতে চাই্। উলটা পালটা কিছু করলে তোর খবর আছে এই বলে দিলাম। আমি কিন্তু আবারো বলছি, বিষের বোতল কিন্তু আমার কাছেই আছে।
বার বার এক কথা শুনে আমার অস্বস্তি ও বিরক্তি দুটোই আরো বেড়ে গেলো। মাকে কেমন জানি লোভী মনে হলো। অভাব হয়তো মানুষকে বদলে দেয়। নাকি এসবই বাস্তবতা!
আমি অস্ফুষ্ট স্বরে বললাম,
-মা তুমি চুপ করো। আমার এসব শুনতে ভালো লাগছে না।
-কেন ? চুপ করবো কেন? আমি কি খারাপ কিছু বলেছি?
আমার আর ভালো লাগছিলো না। আমি খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলেই ফেললাম
-ঠিক আছে, ঠিক আছে। তুমি যা বলবে তাই হবে। এবার একটু থামো। এসব অশান্তি আমার আর ভালো লাগছে না।
-সন্ধ্যাবেলা বাড়ি থাকবি। লোকজন আসবে।
কেন ভালো কিছু কোন সময়ই আমার সাথে হয়না ? বুকের মধ্যে কেমন যেন খাঁ খাঁ করতে লাগলো। চোখ ফেটে পানি আসতে লাগলো। সুলেখাকে যে আমি কথা দিয়েছি তার দুঃখ কষ্টে আমি সবসময় তার পাশে থাকবো। কখনো তার হাত ছাড়বো না্। কখনো না। সব কি তবে মিথ্যে হয়ে যাবে। হায় হায় আমি তো মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো সুলেখার কাছে। কি ভাববে মেয়েটা? এত দুঃখী! ওর দুঃখগুলো কে ঘুচাবে? এই দুঃখী মেয়েটার সাথে আমি পথ চলতে চেয়েছিলাম। সারাজীবনের সঙ্আগী হতে চেয়েছিলাম। আমি পাশে না থাকলে, ও তো কচুরিপানার মতো ভেসে যাবে।
বিকালে একটু বের হলাম।মায়ের বারণ সত্তেও বের হলাম। সুলেখা আসবে। মা কি বুঝলো কে জানে গজগজ করতে লাগলো।
-কি হলো, কি চলছে মনের মধ্যে,কি এত ছাইপাশ ভাবছিস?
আমি মাথা নাড়লাম।
-ওসব উলটা পালটা মেয়ের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলো। ওসব মেয়েদের আমি খুব চিনি। সব খোঁজ খবর আছে আমার কাছে। তোর জন্য যার কথা ভেবেছি সে অতি রুপসী গুণবতী। একসাথে রাজকন্যা ও রাজত্ব সব পাবে। সারাজীবন রাজার হালে থাকতে পারবে।
-মা,আমার রুপসী গুণবতী মেয়ে চাই না। রাজকন্যা ও রাজত্ব ও চাই না।
-এখন তুমি মোহে আছো। আমার কথা এখন তেতো লাগছে। মোহ দিয়ে জীবন চলে না। সুযোগ সবসময় আসে না। আর যেনো আমি তোর ভালোই চাই। আর শোন কি চাই আর কি চাইনা সে আমি বুঝবো।
অনেক কষ্ট করেছি সারা জীবন এবার একটু সুখের মুখ দেখতে চাই্। উলটা পালটা কিছু করলে তোর খবর আছে এই বলে দিলাম। আমি কিন্তু আবারো বলছি, বিষের বোতল কিন্তু আমার কাছেই আছে।
বার বার এক কথা শুনে আমার অস্বস্তি ও বিরক্তি দুটোই আরো বেড়ে গেলো। মাকে কেমন জানি লোভী মনে হলো। অভাব হয়তো মানুষকে বদলে দেয়। নাকি এসবই বাস্তবতা!
আমি অস্ফুষ্ট স্বরে বললাম,
-মা তুমি চুপ করো। আমার এসব শুনতে ভালো লাগছে না।
-কেন ? চুপ করবো কেন? আমি কি খারাপ কিছু বলেছি?
আমার আর ভালো লাগছিলো না। আমি খানিকটা উত্তেজিত হয়ে বলেই ফেললাম
-ঠিক আছে, ঠিক আছে। তুমি যা বলবে তাই হবে। এবার একটু থামো। এসব অশান্তি আমার আর ভালো লাগছে না।
-সন্ধ্যাবেলা বাড়ি থাকবি। লোকজন আসবে।
কেন ভালো কিছু কোন সময়ই আমার সাথে হয়না ? বুকের মধ্যে কেমন যেন খাঁ খাঁ করতে লাগলো। চোখ ফেটে পানি আসতে লাগলো। সুলেখাকে যে আমি কথা দিয়েছি তার দুঃখ কষ্টে আমি সবসময় তার পাশে থাকবো। কখনো তার হাত ছাড়বো না্। কখনো না। সব কি তবে মিথ্যে হয়ে যাবে। হায় হায় আমি তো মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো সুলেখার কাছে। কি ভাববে মেয়েটা? এত দুঃখী! ওর দুঃখগুলো কে ঘুচাবে? এই দুঃখী মেয়েটার সাথে আমি পথ চলতে চেয়েছিলাম। সারাজীবনের সঙ্আগী হতে চেয়েছিলাম। আমি পাশে না থাকলে, ও তো কচুরিপানার মতো ভেসে যাবে।
বিকালে একটু বের হলাম।মায়ের বারণ সত্তেও বের হলাম। সুলেখা আসবে। মা কি বুঝলো কে জানে গজগজ করতে লাগলো।
সঠিক সময়ে সুলেখা এলো। অন্যদিন সুলেখার চোখ মুখ সদা ঝলমল করে ওঠে আমায় দেখে। আমার সাথে সঙ্গটা সে উপভোগ করে তবে আজ তার চোখ মুখ কেমন যেন ম্লান দেখাচ্ছে। দূর থেকে দেখেই বুঝতে পারলাম। অনেক কান্নাকাটি করেছে সে। কি হয়েছে সুলেখার? তার সৎ বাবা তাকে কিছু বলেছে? বা অন্য কেউ?
প্রথমেই জানতে চাইলাম এত বিষণ্ন কেন দেখাচ্ছে তাকে? কি হয়েছে তার?
চুপ করে রইলো সে। অনেকক্ষণ চুপ করে রইলো সে। আমার হাতটা ধরে অনেকক্ষণ বসে রইলো চুপচাপ। তারপর তাকালো আমার দিকে। কি যে অসহায় দৃষ্টি আমি উতলা হয়ে জানতে চাইলাম
-কি হয়েছে সুলেখা কোন সমস্যা? কথা বলছো না কেন?
সুলেখা কোন কথা বলল না আবারো চুপচাপ। কোন কোন নীরবতা ভয়ঙ্কর উদ্বেগ তেরী করে। ধৈর্যের বাঁধকে ভেঙে ফেলে। কোথায় আমি আমার সমস্যার কথা বলতে এসেছি আর এখনতো দেখি সুলেখার এ অবস্থা। উফ! ভয়ঙ্কর সমস্যার আবর্তে জড়িয়ে যাচ্ছে যেন আমার এ জীবন। কঠিন সময় আসছে সেটা খানিকটা হলেও উপলব্ধি করলাম।
যা হোক সুলেখা যখন বলবেনা তখন আমি শুরু করলাম আমার সমস্যার কথা। আমি জানালাম আমার দম বন্ধ করা পরিস্থিতির কথা। অনেকক্ষণ আমরা চুপচাপ হাত ধরা ধরি করে বসে রইলাম। এবার হয়তো সুলেখা কিছু বলবে কিন্তু না সুলেখা চুপ করে রইলো কিছুই বলল না। কেন যেনো সুলেখা কিছু বলতে চা্ইলো না। বিকেল ফুরিয়ে আসছে বাড়ি ফিরতে হবে। আসার সময় সুলেখা খুব কান্নাকাটি শুরু করলো আমি তাকে অনেক করে বোঝালাম বললাম, আরে বাবা এখনই এতো ভেঙে পড়ছো কেন? এখনো অনেক সময় আছে কথাবার্তা প্রাথমিক পর্যায়ে তুমি খালি খালি চিন্তা করছো। দেখবে ঠিক ব্যপারটা আমি ম্যানেজ করে নিতে পারবো। তোমার কি হয়েছে তাই বলো।
এবার সুলেখা আমার হাতটা টেনে ধরে বসালো, বলল,
-তোমাকে বলা হয়নি এমন কিছু কথা আজ তোমাকে বলবো বলেই এসেছি। কিন্তু কিভাবে বলবো বুঝতে পারছিনা।
-কি কথা? যা আমি জানি না। কি বলবে? আমি সুলেখার চোখে চোখ রাখলাম।
সুলেখা হঠাৎ স্পষ্ট উচ্চারণে বলল,
-আমি তোমার সাথে মিথ্যা বলেছি ।
-কি মিথ্যা বলেছো?
-তুমি আমায় ক্ষমা করো।
-আগে বলো তুমি কি মিথ্যা বলেছো?
-না থাক তুমি আঘাত পাবে।
-আমি আঘাত পাবোনা তুমি বলো। বলো তুমি তোমার কি হয়েছে?
সুলেখা চোখ বন্ধ করে ফেলল তারপর ঢোক গিলে কোন রকমে বলল,
-আমি…..আমি বিবাহিতা !!!!!!! আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি। সত্য গোপন করেছি।
নিজের কান কে যেন বিশ্বাস করতে পারলাম না। এসব কি হচ্ছে আমার সাথে ?
প্রথমেই জানতে চাইলাম এত বিষণ্ন কেন দেখাচ্ছে তাকে? কি হয়েছে তার?
চুপ করে রইলো সে। অনেকক্ষণ চুপ করে রইলো সে। আমার হাতটা ধরে অনেকক্ষণ বসে রইলো চুপচাপ। তারপর তাকালো আমার দিকে। কি যে অসহায় দৃষ্টি আমি উতলা হয়ে জানতে চাইলাম
-কি হয়েছে সুলেখা কোন সমস্যা? কথা বলছো না কেন?
সুলেখা কোন কথা বলল না আবারো চুপচাপ। কোন কোন নীরবতা ভয়ঙ্কর উদ্বেগ তেরী করে। ধৈর্যের বাঁধকে ভেঙে ফেলে। কোথায় আমি আমার সমস্যার কথা বলতে এসেছি আর এখনতো দেখি সুলেখার এ অবস্থা। উফ! ভয়ঙ্কর সমস্যার আবর্তে জড়িয়ে যাচ্ছে যেন আমার এ জীবন। কঠিন সময় আসছে সেটা খানিকটা হলেও উপলব্ধি করলাম।
যা হোক সুলেখা যখন বলবেনা তখন আমি শুরু করলাম আমার সমস্যার কথা। আমি জানালাম আমার দম বন্ধ করা পরিস্থিতির কথা। অনেকক্ষণ আমরা চুপচাপ হাত ধরা ধরি করে বসে রইলাম। এবার হয়তো সুলেখা কিছু বলবে কিন্তু না সুলেখা চুপ করে রইলো কিছুই বলল না। কেন যেনো সুলেখা কিছু বলতে চা্ইলো না। বিকেল ফুরিয়ে আসছে বাড়ি ফিরতে হবে। আসার সময় সুলেখা খুব কান্নাকাটি শুরু করলো আমি তাকে অনেক করে বোঝালাম বললাম, আরে বাবা এখনই এতো ভেঙে পড়ছো কেন? এখনো অনেক সময় আছে কথাবার্তা প্রাথমিক পর্যায়ে তুমি খালি খালি চিন্তা করছো। দেখবে ঠিক ব্যপারটা আমি ম্যানেজ করে নিতে পারবো। তোমার কি হয়েছে তাই বলো।
এবার সুলেখা আমার হাতটা টেনে ধরে বসালো, বলল,
-তোমাকে বলা হয়নি এমন কিছু কথা আজ তোমাকে বলবো বলেই এসেছি। কিন্তু কিভাবে বলবো বুঝতে পারছিনা।
-কি কথা? যা আমি জানি না। কি বলবে? আমি সুলেখার চোখে চোখ রাখলাম।
সুলেখা হঠাৎ স্পষ্ট উচ্চারণে বলল,
-আমি তোমার সাথে মিথ্যা বলেছি ।
-কি মিথ্যা বলেছো?
-তুমি আমায় ক্ষমা করো।
-আগে বলো তুমি কি মিথ্যা বলেছো?
-না থাক তুমি আঘাত পাবে।
-আমি আঘাত পাবোনা তুমি বলো। বলো তুমি তোমার কি হয়েছে?
সুলেখা চোখ বন্ধ করে ফেলল তারপর ঢোক গিলে কোন রকমে বলল,
-আমি…..আমি বিবাহিতা !!!!!!! আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি। সত্য গোপন করেছি।
নিজের কান কে যেন বিশ্বাস করতে পারলাম না। এসব কি হচ্ছে আমার সাথে ?
[৪]
হঠাৎ করে নিজেকে কেমন যেনো বোকা বোকা লাগছে। ছোট বোন চারু বার বার উঁকি ঝুঁকি মারছে আমার ঘরে। আমার গতিবিধি লক্ষ করছে। হয়তো মায়ের পক্ষে গোয়েন্দাগিরি করতে নেমেছে। বিরক্তিকর। সুযোগ মতো পেয়ে আমি একবার চোখ কটমট করে তাকাতে ভয় পেয়ে চলে গেলো। আমি জানি সে মোটেও চলে যায়নি। শুধু একটু সাবধানী হয়েছে মাত্র। খুব চালাক প্রকৃতির মেয়ে সে।
আমাকে সে ঠিকই নজরে রাখবে। চারুর মাতৃভক্তি ও প্রবল। মায়ের কথা সে সবসময় অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। তিন ভাই বোনের মধ্যে সে ই সবচেয়ে বেশি মায়ের ভক্ত।
মন টা আজ খুবই বিক্ষিপ্ত। সকাল থেকেই যা যা ঘটেছে তাতে করে মনের মধ্যে অদ্ভুত এক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। সকাল সকাল কার মুখ দেখে ঘুম ভেঙেছিলো কে জানে। দিনটাই আজ মাটি।
হঠাৎ করে মায়ের আচরণ আজকে এমন হয়ে গেলো কেন? কি এমন হয়েছে? বলা নেই কওয়া নেই দুম করে বিয়ের প্রস্তাবই বা জোগাড় করলো কোথা থেকে কে জানে? যতই ভালো প্রস্তাব হোক। ভালো করে জানা নেই শোনা নেই অমনি বিয়ে। ব্যপারটা কেমন যেন খাপ ছাড়া লাগলো আমার কাছে। মা অভাবের জ্বালায় সবকিছু নিয়ে বেশি টেনশন করে সেটা আমি জানি কিন্তু তার এই লোভী রূপ আমায় আহত করল। সমস্ত যুক্তি বোধ বুদ্ধি সব হারিয়ে ফেলেছে বলে আমার মনে হলো।
স্ত্রীর সম্পদে আমি কখনো ধনী হবার পক্ষপাতি নই। মনের মিল না হলে অধিক রুপবতী দিয়ে জীবন কাটানো যাবে কি? বিয়ে দুটি মানুষের সারাজীবনের ব্যপার। এতো তাড়াহুড়োর কি আছে?
মনের মধ্যে নানা চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগলো অনবরত। সুলেখার কথা ভাবতেই মাথাটা ঝিমঝিম করে উঠছে। সুলেখাও আমার সাথে এত বড় বেঈমানী কি করে করল। কি দরকার ছিলো এই ছলনার। আমি ঠিক করলাম সুলেখাকে ভুলে যাবো ।যত কষ্টই হোক না কেন, অন্তর জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায় যাক, আমায় সুলেখাকে ভূলে যেতে হবে। এক সাথে দুটো সম্পর্ক কখনো ই কারো মঙ্গল ডেকে আনবে না। সবদিক বাঁচাতে আমাকে বরং নতুন জীবনেই মানিয়ে নেয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।নানা কথা ভাবতে ভাবতে একটু তন্দ্রা মত এসেছিলো।কাছের মসজিদে এশার আযান হচ্ছে।
ঠিক তখনই গাড়ীর হর্ণের বিকট আওয়াজে তন্দ্রা ছুটে গেলো। চারু এসে জানালো নতুন আত্নীয়রা চলে এসেছে। পোশাক পরে মা তৈরি হতে বলেছে। কিছুক্ষণ পরে এক ফাঁকে মাও এসে একটু সাজগোজ করার তাগাদা দিয়ে গেলো। মা আর বোনের ব্যস্ততা দেখে আমার হাসি পাচ্ছে। যেহেতু আমি ঘর অন্ধকার করে শুয়ে ছিলাম। উঠে আলো জ্বাললাম। মনের কষ্ট মনেই রাখতে হবে। সুলেখাকে ভূলে যেতে হবে। সুলেখার স্মৃতি ভুলে যেতে হবে। আমার ইচ্ছে না করলেও মায়ের কড়া হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার আপ্রাণ চেষ্ট করলাম। কিন্তু কেন যেন বার বার সুলেখার কথা, তার ছবি,তার হাসি আমার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো। বুকের কষ্ট গুলো দলা হয়ে গলায় এসে জমা হলো। জগতের এই অবাঞ্ছিত রূপকে আমার কাছে বিষাক্ত মনে হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি মা আবারও ফিরে এলেন,
-ঘরের মধ্যে এখনো কি করছিস। তৈরি হয়ে নে।
-মা এতো ব্যস্ত হবার কি আছে? একটু সময় নাও।
-না সময় নেওয়া যাবে না। সুমিতার মামা বিদেশ থেকে এসছেন উনি ব্যস্ত মানুষ। উনার ব্যস্ততা আছে, উনি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে যাবেন। তিনি চান যাবার আগে বিয়েটা হয়ে যাক। তুমি তাড়াতাড়ি এসো।ওনারা অপেক্ষা করছে।
-সব তো সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছো, এখানে আমার আর কি দরকার?
-বেশি বুঝতে চেষ্টা করো না। সব তোমার ভালোর জন্য করা হচ্ছে। বাড়ি ভর্তি লোকজন আমি চাইনা তুমি এতো লোকের মধ্যে কোন নাটক করো।
-ঠিক আছে মা তুমি নিশ্চিত থাকো আমি কোন কিছু করবো না। প্রমিজ। দয়া করে এখন বিরক্ত করো না।
-মা চলে গেলেন। যাবার আগে যথারীতি তাড়া দিয়ে গেলেন।
-ঘরের মধ্যে এখনো কি করছিস। তৈরি হয়ে নে।
-মা এতো ব্যস্ত হবার কি আছে? একটু সময় নাও।
-না সময় নেওয়া যাবে না। সুমিতার মামা বিদেশ থেকে এসছেন উনি ব্যস্ত মানুষ। উনার ব্যস্ততা আছে, উনি খুব তাড়াতাড়ি ফিরে যাবেন। তিনি চান যাবার আগে বিয়েটা হয়ে যাক। তুমি তাড়াতাড়ি এসো।ওনারা অপেক্ষা করছে।
-সব তো সিদ্ধান্ত নিয়েই নিয়েছো, এখানে আমার আর কি দরকার?
-বেশি বুঝতে চেষ্টা করো না। সব তোমার ভালোর জন্য করা হচ্ছে। বাড়ি ভর্তি লোকজন আমি চাইনা তুমি এতো লোকের মধ্যে কোন নাটক করো।
-ঠিক আছে মা তুমি নিশ্চিত থাকো আমি কোন কিছু করবো না। প্রমিজ। দয়া করে এখন বিরক্ত করো না।
-মা চলে গেলেন। যাবার আগে যথারীতি তাড়া দিয়ে গেলেন।
মা যখন আমার কোন কথাই শুনবে না বলে ঠিক করেছে তখন সেই কথা ভাবতেই আমার মনের মধ্যে এক তীব্র অভিমান জমা হলো। বড় আপা নিজের ইচ্ছায় বাড়ি ছাড়লো অজানা অচেনা ছেলের হাত ধরে। আমাদের কথা একটুও ভাবলো না। নিজেরটাই শুধু ভাবলো। মা বাবা দুজনের মনেই এর জন্য কষ্ট সহ অপমান বোধের এক গভীর ক্ষত এখনো জ্বলজ্বল করছে। আমি ঠিক করলাম আমি আর তাদের দুঃখের কারণ হবো না। আজ আর নিজের কথা ভাববো না। জীবনে যা হবার হবে।
সুলেখাও ছলনার আশ্রয় নিয়ে, নিজের অবস্থান গোপন করে, আমাকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে চরম কষ্ট দিয়েছে। নারী জাতির প্রতি মনটা কেমন যেন বিষিয়ে উঠলো্। যদিও এটা ঠিক না একজনের দোষে সমগ্র নারী জাতিকে দোষী ভাবা ঠিক না। তবুও মনের আকাশে কত কথাই না ভেসে বেড়াতে লাগলো। সুমিতাও কি এমন হবে? শুধু নিজের কথাই ভাববে ? কি হবে বিয়ে করে শুধু দুখ কষ্টের মধ্যে নিজেকে টেনে নিয়ে আমি বুঝতে পারছি মা এসে বকবে আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে।
তবু আবারো ঘুরে ফিরে মনের মধ্যে সুলেখার চিন্তা এলো। এমন কেন হচ্ছে বুঝতে পারছিনা। যাকে আমি ভুলতে চাচ্ছি সে কেন বারবার আমার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে?
তবু আবারো ঘুরে ফিরে মনের মধ্যে সুলেখার চিন্তা এলো। এমন কেন হচ্ছে বুঝতে পারছিনা। যাকে আমি ভুলতে চাচ্ছি সে কেন বারবার আমার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে?
আচ্ছা বিবাহিতা মেয়েদের দেখলে তো খানিকটা চেনা যায়। সুলেখার মধ্যে তো তেমন কোন চিহ্ণ দেখা যায়নি। গিয়েছে কি? আমার চোখে তো পড়েনি। নাকি প্রেমে আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম। আমি কি বোকা!
আমি তো ততটা বোকা নই, সুলেখার কোন সাজ-পোষাকে দৈহিক আচরণে তাকে বিবাহিতা মনে হয়নি। নাকি হয়েছে। সুলেখা যদি বিবাহিতা হয় তাহলে আমার প্রথম প্রেম পরকীয়ায় কলঙ্কিত হয়েছে।
ছিঃ! সুলেখা ছিঃ! আমার সাথে এমনটা কিভাবে করতে পারলো। এই নষ্ট কলঙ্কিত মেয়েটাকে আমার জীবনের ডায়েরি থেকে চিরতরে মুছে ফেলতে হবে। ফেলতেই হবে।
আমি তো ততটা বোকা নই, সুলেখার কোন সাজ-পোষাকে দৈহিক আচরণে তাকে বিবাহিতা মনে হয়নি। নাকি হয়েছে। সুলেখা যদি বিবাহিতা হয় তাহলে আমার প্রথম প্রেম পরকীয়ায় কলঙ্কিত হয়েছে।
ছিঃ! সুলেখা ছিঃ! আমার সাথে এমনটা কিভাবে করতে পারলো। এই নষ্ট কলঙ্কিত মেয়েটাকে আমার জীবনের ডায়েরি থেকে চিরতরে মুছে ফেলতে হবে। ফেলতেই হবে।
তাছাড়া একজনের সংসার ভাঙার অধিকার আমার নেই আমি মনে মনে ঠিক করলাম সুলেখার সাথে আর দেখা বা যোগাযোগ কিছুই করবো না। সে থাকুক তার মতো। যদিও এই সিদ্ধান্ত নিতে আমার বুকটা হু হু করে উঠলো তবু আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকলাম। আমি অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আর সুলেখার সাথে কোন ক্রমেই যোগাযোগ করবো না।
পরের সপ্তাহে আমার বিয়েটা হয়ে গেলো। বেশি ধুমধাম নয়, সামান্য কিছু আয়োজনে। আত্মীয় স্বজন সকলে ধন্য ধন্য করতে লাগলো আমার বউকে দেখে। সারা দুপুর বিকেল সুমিতা আমার সাথে থাকলেও কথা বলার সুযোগ খুব একটা হলো না। তবে তাকে আচার আচরণে খারাপ মনে হলো না। প্রথম দেখায় যে কেউ সুমিতাকে খুব পছন্দ করবে। নিপাট নিরীহ দেখতে একটা মেয়ে সুমিতা। রূপে তেমন আহামরি না হলেও কথাবার্তায় বাচনভঙ্গীতে অত্যন্ত সাবলীল। অনেক সহজে সে যে কারো সাথে মিশে যেতে পারে বলে মনে হচ্ছে। নববধুরা খুব একটা কথা বলে না কিন্তু সুমিতা বেশ কথা বলছে। সুযোগ বুঝে দুএকবার সে আমাকে খোঁচা ও মেরেছে। আমি খনিকটা অবাক।
একটু রাত হতেই মা বললেন, বাবু যা ঘরে যা ঘুমিয়ে পড় গে যা। অন্যদিন হলে কিছু মনে করতাম না কিন্তু আজ বেশ লজ্জা লজ্জা লাগলো। চারু মিচমিচ করে হাসতেই আমি চোখ পাকালাম কিন্তু তাতে সে একটুও ভয় পেলো বলে মনে হলো না। খিলখিল করে হাসতে লাগলো। আমি একরকম পালিয়ে ঘরে চলে এলাম।
ঘরে ঢুকতেই সুমিতা বলল, এতো দেরী হলো যে আমি তো কতক্ষণ হলো অপেক্ষা করছি। কি করছিলে।
-না মানে গেস্ট ছিলো তো তাই ।
– ও এখন বুঝি ঘুম পেয়েছে তা্ই এসছেন? তাই তো?
-আমি এতো সকালে ঘুমাইনা।
-ও ভালো। আমিও সকাল সকাল ঘুমাইনা। যাক গল্প করা যাবে। বসুন।
এ মেয়েটি দেখছি অনেক বেশি ফটফটিয়া। নতুন বউ এত চোখে মুখে কথা বলতে পারে জানা ছিলো না। আমি বললাম,
-তোমায় কিন্তু দেখতে বেশ।
-বাহ এত ভালো করে কখন দেখলেন। আচ্ছা আপনার নাম অলক, তাই তো? অলক মানে কি?
-অলক মানে কুঞ্চিত চুল। তোমাকে বেশ লক্ষী টাইপ দেখতে!
-অতি ভক্তি কিন্তু চোরের লক্ষণ।
-আচ্ছা তুমি তো বেশ চটপটে একটা মেয়ে প্রেম ট্রেম করোনি? লাভ ম্যরেজ না করে এরেন্জ ম্যরেজ করলে যে?
-আপনিও তো লাভ ম্যারেজ না করে ……. যা হোক রাতে পানি টানি খেলে ওই ওখানে রাখা আছে।
-আমার প্রশ্নের উত্তর পেলাম না কিন্তু?
-ছেলে দেখলে ভয় লাগে তাই প্রেম ট্রেম করিনি।
-তুমি …ছেলে দেখলে ভয়?! আমায় দেখেও কি ভয় লাগছে?
-জানি না বুঝতে পারছি না। তবে খুব লজ্জা লাগছে।
-তোমার কথাবার্তায় কিন্তু সেরকম মনে হচ্ছেনা। যাক লজ্জা পাওয়া ভালো। ভয় পেলে সমস্যা।
-কি রকম?
-এই যেমন তোমায় একটু ছুঁয়ে দিলাম যদি ভয় পাও তাহলে তো চেঁচাবে। চেঁচালে মান সম্মান আর থাকবে?
-আমি মোটেও ওরকম হ্যাবলা ভ্যাবলা টাইপ মেয়ে না।
-আমি কি তোমায় একটু স্পর্শ করতে পারি।
-আপনার কি আমায় খুব স্পর্শ করতে ইচ্ছা করছে।
-এ আবার কেমন কথা ? করছেই তো।
-তাহলে বাতি নিভিয়ে দিয়ে আসুন, এসে আমায় স্পর্শ করুন।
আমি বাতি নিভিয়ে দিলাম। ঝুম অন্ধকার। ঘরটা আমার পরিচিত কিন্তু সুমিতা কে কোথাও দেখছি না মানে ওর সাড়া শব্দ পাচ্ছি না।
-সুমিতা তুমি কোথায়?
হালকা হাসির শব্দ এলো।
-কি হলো?
-আমার একটা প্রশ্ন ছিলো?
-কি প্রশ্ন?
-আচ্ছা সুলেখাকে বিয়ে করলে না কেন?
হঠাৎ আমি থমকে গেলাম, মুখ ফসকে বেরিয়ে এলো, তুমি কি সুলেখাকে চেনো? কিভাবে?
হঠাৎ সব কেমন যেন চুপচাপ। কোন আওয়াজ নেই কিছুক্ষন পরে সুমিতা গম্ভীর হয়ে বলল,
-রাত অনেক হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়ো। আমার ঘুম পাচ্ছে।
মনটা হঠাৎ ভার হয়ে গেলো। কি বলবো বুঝতে পারছি না। একটু বিব্রত ও লজ্জিত ও হলাম কিন্তু আরো অবাক হলাম ভেবে এই মেয়েটি সুলেখার কথা জানলো কি করে। আমাদের প্রেম তো এত ফাটাফাটি টাইপের না যে লোক জানা জানি হয়ে অন্যরকম অবস্থা। আর এসব জানার পরও এই মেয়ে তবে আমাকে বিয়েতে রাজী হলো কেন? না করে দিতেই পারতো। আবার জানলেও চেপে যেতে পারতো। অন্তত আজ এসব কথা কি তোলা খুবই জরূরী ছিলো? কি চায় মেয়েটি? সুমিতার আচরণ গুলো কেমন যেন সন্দেহ লাগলো আমার কাছে…….
ঘরে ঢুকতেই সুমিতা বলল, এতো দেরী হলো যে আমি তো কতক্ষণ হলো অপেক্ষা করছি। কি করছিলে।
-না মানে গেস্ট ছিলো তো তাই ।
– ও এখন বুঝি ঘুম পেয়েছে তা্ই এসছেন? তাই তো?
-আমি এতো সকালে ঘুমাইনা।
-ও ভালো। আমিও সকাল সকাল ঘুমাইনা। যাক গল্প করা যাবে। বসুন।
এ মেয়েটি দেখছি অনেক বেশি ফটফটিয়া। নতুন বউ এত চোখে মুখে কথা বলতে পারে জানা ছিলো না। আমি বললাম,
-তোমায় কিন্তু দেখতে বেশ।
-বাহ এত ভালো করে কখন দেখলেন। আচ্ছা আপনার নাম অলক, তাই তো? অলক মানে কি?
-অলক মানে কুঞ্চিত চুল। তোমাকে বেশ লক্ষী টাইপ দেখতে!
-অতি ভক্তি কিন্তু চোরের লক্ষণ।
-আচ্ছা তুমি তো বেশ চটপটে একটা মেয়ে প্রেম ট্রেম করোনি? লাভ ম্যরেজ না করে এরেন্জ ম্যরেজ করলে যে?
-আপনিও তো লাভ ম্যারেজ না করে ……. যা হোক রাতে পানি টানি খেলে ওই ওখানে রাখা আছে।
-আমার প্রশ্নের উত্তর পেলাম না কিন্তু?
-ছেলে দেখলে ভয় লাগে তাই প্রেম ট্রেম করিনি।
-তুমি …ছেলে দেখলে ভয়?! আমায় দেখেও কি ভয় লাগছে?
-জানি না বুঝতে পারছি না। তবে খুব লজ্জা লাগছে।
-তোমার কথাবার্তায় কিন্তু সেরকম মনে হচ্ছেনা। যাক লজ্জা পাওয়া ভালো। ভয় পেলে সমস্যা।
-কি রকম?
-এই যেমন তোমায় একটু ছুঁয়ে দিলাম যদি ভয় পাও তাহলে তো চেঁচাবে। চেঁচালে মান সম্মান আর থাকবে?
-আমি মোটেও ওরকম হ্যাবলা ভ্যাবলা টাইপ মেয়ে না।
-আমি কি তোমায় একটু স্পর্শ করতে পারি।
-আপনার কি আমায় খুব স্পর্শ করতে ইচ্ছা করছে।
-এ আবার কেমন কথা ? করছেই তো।
-তাহলে বাতি নিভিয়ে দিয়ে আসুন, এসে আমায় স্পর্শ করুন।
আমি বাতি নিভিয়ে দিলাম। ঝুম অন্ধকার। ঘরটা আমার পরিচিত কিন্তু সুমিতা কে কোথাও দেখছি না মানে ওর সাড়া শব্দ পাচ্ছি না।
-সুমিতা তুমি কোথায়?
হালকা হাসির শব্দ এলো।
-কি হলো?
-আমার একটা প্রশ্ন ছিলো?
-কি প্রশ্ন?
-আচ্ছা সুলেখাকে বিয়ে করলে না কেন?
হঠাৎ আমি থমকে গেলাম, মুখ ফসকে বেরিয়ে এলো, তুমি কি সুলেখাকে চেনো? কিভাবে?
হঠাৎ সব কেমন যেন চুপচাপ। কোন আওয়াজ নেই কিছুক্ষন পরে সুমিতা গম্ভীর হয়ে বলল,
-রাত অনেক হয়েছে, ঘুমিয়ে পড়ো। আমার ঘুম পাচ্ছে।
মনটা হঠাৎ ভার হয়ে গেলো। কি বলবো বুঝতে পারছি না। একটু বিব্রত ও লজ্জিত ও হলাম কিন্তু আরো অবাক হলাম ভেবে এই মেয়েটি সুলেখার কথা জানলো কি করে। আমাদের প্রেম তো এত ফাটাফাটি টাইপের না যে লোক জানা জানি হয়ে অন্যরকম অবস্থা। আর এসব জানার পরও এই মেয়ে তবে আমাকে বিয়েতে রাজী হলো কেন? না করে দিতেই পারতো। আবার জানলেও চেপে যেতে পারতো। অন্তত আজ এসব কথা কি তোলা খুবই জরূরী ছিলো? কি চায় মেয়েটি? সুমিতার আচরণ গুলো কেমন যেন সন্দেহ লাগলো আমার কাছে…….
অসমাপ্ত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন